n
আজকের যুগে ‘এলিয়েন’ এক চটকদার বিষয়ের নাম। যেকোনো আলাপে এলিয়েন থাকা মানে, সে আলাপে মানুষের প্রত্যাশা পারদ অবস্থান করে অতি উচ্চে। বহির্জগতে এই এলিয়েনের কিংবা ভিনগ্রহী প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধান করতে করতে রাতের ঘুম হারাম করে ফেলছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। কিন্তু আজ থেকে প্রায় অর্ধশত বছর পূর্বে আমেরিকার এক বিজ্ঞানী প্রশ্ন দাঁড় করিয়েছিলেন খোদ মানুষের অস্তিত্ব নিয়েই, বহির্জাগতিক এলিয়েন নিয়ে নয়। হাত-পা-শরীর নিয়ে আমাদের সকলের সামনে জ্বলজ্যান্ত মানুষের অস্তিত্ব-তো বিদ্যমানই। তাহলে সেটা নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠবে কেন? কারণটা হলো, তিনি সরাসরি মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠাননি। উঠিয়েছেন পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে। সেটাও একটু ভিন্ন সুরে। সে বিষয়টিকেই এখন অবস্কিউর বায়োকেমিক্যাল প্যারাডক্সের ছাঁচে বিশ্লেষণ করা হবে।
nnnn
nnnn
ক্যালেন্ডারের পাতায় তখন ১৯৬৯ সাল। সাইরাস ল্যাভিন্থাল নামক এক আমেরিকান মলিকিউলার বায়োলজিস্ট মানবদেহে বিদ্যমান প্রোটিন নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। মানবদেহে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লেষিত এক প্রক্রিয়া হুঁশ উড়িয়ে দেয় তাঁর। সেটা হলো প্রোটিন ফোল্ডিং। জীববিজ্ঞানের খটরমটর ব্যাখ্যা এড়িয়ে সোজা ভাষায় বললে, প্রোটিন হলো ‘Language of Life‘ বা ‘জীবনের ভাষা’। পিতা-মাতা থেকে আমরা যে ডিএনএ (DNA) পাই, সেগুলোতে সেট করা থাকে নির্দিষ্ট কোড। এই কোডগুলো রূপান্তরিত হয় আরএনএ-তে (RNA), এবং সেই RNA রূপান্তরিত হয় নির্দিষ্ট কিছু অ্যামাইনো এসিডে।
nnnn
nnnn
অনেকগুলো অ্যামাইনো এসিড একসাথে মালার মতো হয়ে তৈরি করে প্রোটিন। সেই প্রোটিন আমাদের শরীরে এক্সপ্রেশন ঘটিয়ে আমাদের একেকটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। যেমন, কারও বাবার চুলের রং, এবং মায়ের চুলের রং কালো হলে সন্তানের চুলের রং স্বাভাবিকভাবেই কালো হবে। এই যে সন্তানের চুলের বর্ণ নির্ধারণ পদ্ধতি, সে নির্দেশনাটাই সেট করা ছিল ডিএনএ-তে, যা সে তার পিতা-মাতা থেকে বংশানুক্রমে লাভ করেছে। আর হ্যাঁ, কোনো প্রোটিন সক্রিয় হতে হলে অবশ্যই তাকে একটি নির্দিষ্ট আকার ও আয়তনে প্যাঁচানো (ফোল্ডিং) থাকতে হবে।
nnnn
nnnn
এবার ফিরে আসা যাক ল্যাভিন্থালের গবেষণায়। তিনি লক্ষ্য করেন, মানবশরীরে উপস্থিত প্রোটিন অনেকগুলো অ্যামাইনো এসিড দিয়ে গঠিত। সেখান থেকে শুধুমাত্র ১০০ অ্যামাইনো এসিডের একটি চেইন নেওয়া হলে, তা দিয়ে প্রায় ৩^১০০ সংখ্যক প্যাঁচানো গঠন (ফোল্ডেড স্ট্রাকচার) বানানো সম্ভব। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এতো বড় সংখ্যার মধ্যে শুধু একটি স্ট্রাকচার বা গঠনই গ্রহণযোগ্য। বাকিগুলোর দরকার নেই। কিন্তু এত ভিন্ন সংখ্যক ফোল্ডিংয়ের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, আমাদের দেহ সবকিছু পরখ করে মিলিসেকেন্ডেই সঠিক কাজটা সম্পাদনা করে দেয়। দেহে প্রোটিন কত দ্রুত ফোল্ডিং হয় তা বুঝানোর জন্য একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। দুনিয়ার সবচেয়ে দ্রুতগতির রাসায়নিক বিক্রিয়া হচ্ছে পানিতে হাইড্রোনিয়াম আয়ন গঠনের প্রক্রিয়া। যদি ওই গতিতেও প্রোটিন ফোল্ডিং সম্পন্ন হতো, তাতেও শরীরের সকল প্রোটিন ফোল্ড করতে ১০^২৭ বছর লেগে যেত।
nnnn
nnnn
এই প্যারাডক্সকে ব্যাখ্যা করার জন্য ল্যাভিন্থালের কাছে শুধু একটা পথই খোলা ছিল। সেটা হলো, প্রোটিন কীভাবে নিজের সঠিক আকৃতিকে বাছাই করে নেয়। লেভিন্থাল শুরু করলেন জিন নিয়ে গবেষণা। বলে রাখা ভালো, ডিএনএ’র পুরো অংশটুকুই কার্যক্ষম নয়। যে অংশ নির্দিষ্ট বার্তা বহন করে, সেটুকু অংশই হলো জিন। এই জিনগুলোই প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়। মজার ব্যাপার হলো, পুরো ডিএনএ’র মাত্র ১% হলো জিন, বাকি ৯৯% অংশকে বলা হয় জাঙ্ক ডিএনএ। তাই, জিনকে বুঝা মানে প্রোটিনকে বুঝা। ডিএনএ-কে একধরণের রেসিপি বইয়ের সাথে তুলনা করা যায়। প্রোটিনের কাঠামো কেমন হবে, এর নির্দেশনা দেওয়া থাকে জিনে। রহস্যটা এখানেই। লেভিন্থাল তার জীবদ্দশায় এই রহস্যের কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি।
nnnn
nnnn
জটিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য তামাম দুনিয়ার বাঘা-বাঘা সকল বিজ্ঞানীদের হতে হয়েছে একত্র। তাঁদের সোজাসাপ্টা যুক্তি হলো, কোনো জীবের জেনেটিক মেকআপ এবং প্রোটিন স্ট্রাকচার যত সরল হবে, অন্য গ্রহে সে জীব পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে। ভিনগ্রহের প্রাণী হিসেবে তাকে ডাকা যাবে এলিয়েন হিসেবে। সেজন্য বিজ্ঞানীরা শুরু করেন মানব ডিএনএ নিয়ে গবেষণা। ১৩ বছরের ঘামঝড়া পরিশ্রমে হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট দিয়ে মানবজীবনের রহস্যন্মোচন করেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, হোমো স্যাপিয়েন্সদের পুরো ডিএনএ সিকুয়েন্স সম্পন্ন করেছিলেন তারা। কোন প্রোটিনের জন্য কোন জিন দায়ী, সেটাও তারা জানতে পারলেন। কিন্তু প্রোটিন ফোল্ডিং যদি সঠিকভাবে না হয়, তাহলে সেটাকে মিসফোল্ডেড প্রোটিন বলে। মিসফোল্ডেড প্রোটিন শরীরে নানাবিধ জিনগঠিত অসুখের জন্য দায়ী। প্রোটিন মিসফোল্ডিংয়ের কারণে সৃষ্ট পারকিনসনস রোগ এবং আলঝেইমার রোগের চর্চা বহুকাল আগ থেকে হয়ে আসলেও, এগুলো প্রতিরোধের কোনো পদ্ধতি এখনো আবিষ্কার করা যায়নি।
nnnn
nnnn
লেভিন্থালের গবেষণাকে বিশদভাবে পর্যবেক্ষণের পর জন মোল্ট তার সহকর্মীদের সাথে নিয়ে ১৯৯৪ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ‘CASP – Critical Assessment of Protein Structure Prediction’ নামক এক প্রোগ্রাম লঞ্চ করেন। উদ্দেশ্য ছিল, কোনো প্রোটিনের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা এবং ওই প্রোটিনের ফোল্ডিং সম্পর্কে প্রেডিকশন (ভবিষ্যদ্বাণী) করতে পারা। DeepMind নামক এক টেক কোম্পানি ‘AlphaFold‘ নামের এক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু প্রোটিন ফোল্ডিংয়ের প্রক্রিয়া এতোটাই জটিল ছিল যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সও ৩০% এর বেশি সঠিক প্রেডিকশন দিতে পারেনি।
nnnn
nnnn
মূলত এই ‘CASP’ প্রতিযোগিতাটি নামানো হয়েছিল একটা ফাংশনাল প্রোটিনের ফোল্ডিং প্রেডিক্ট করার জন্য। এটাতে দুইটা অংশ ছিল। প্রথমটি ছিল প্রেডিকশন স্টেজ, যেখানে একজন প্রতিযোগী অ্যামাইনো এসিড সিকোয়েন্সের ফাংশনাল ফোল্ডেড স্ট্রাকচার প্রেডিক্ট করবে। দ্বিতীয় স্টেজে প্রেডিক্টেড প্রোটিনের অ্যাকুরেসি টেস্ট করা হত। এভাবে প্রায় ২০ বছরে একটা প্রোটিনের ফোল্ডিংকেও ৬০% এর বেশি প্রেডিক্ট করা যায়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে ঘটে আশ্চর্য এক ঘটনা। ‘CASP – 13’ প্রতিযোগিতায় ‘AlphaFold’ ৭০% সঠিক প্রেডিকশন করে জয়ের মালা গলায় পড়েছিল। কিন্তু এরর মার্জিন তখনও অনেকটা বেশি। সংখ্যার হিসেবে সেটা ৩০%। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতা ‘CASP-14’-তে ‘Alpha Fold’ ৯০% অ্যাকুরেসি হিট করেছিল। বলতে গেলে তা ছিল প্রোটিন ফোল্ডিং প্রেডিকশনের এক বেঞ্চমার্ক। এখন পর্যন্ত CASP এর সর্বোচ্চ অ্যাকুরেসি হিটের রেকর্ড হলো ৯২.৪%, যা আছে Alpha Fold এরই দখলে।
nnnn
nnnn
জিন থেকে প্রোটিন হওয়ার প্রক্রিয়া যেমন জটিল, এর চেয়ে অধিক জটিল হলো প্রোটিন ফোল্ডিং হওয়াটা। প্রতিটি প্রোটিনের মাঝে আলফা হেলিক্স, বিটা শিট নামে দুটি চেইন বিদ্যমান। এরা আরও প্যাঁচিয়ে বানায় সেকেন্ডারি, টারশিয়ারি, কোয়ার্টেনারি স্ট্রাকচার। প্রোটিন ফোল্ডিংয়ের মাত্রা যত বেশি, সেটা তত বেশি স্থিতিশীল। আবার প্রোটিন কার্যক্ষম হবার জন্যও তাকে ফোল্ডিং হতে হয়। এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো, আমাদের রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিনের যদি জটিল কোয়ার্টেনারি স্ট্রাকচার না থাকত, তবে মানবশরীরে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহনই সম্ভব হতো না। ফলে থাকত না মনুষ্যজাতির অস্তিত্ব। শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিনের কথাই ধরা যাক। হিমোগ্লোবিনের এমন জটিল গঠনের প্রোটিন ফোল্ডিং এলিয়েন তো দূরে থাক, মানুষের মধ্যে যে বিদ্যমান, সেটাই বহুল বিস্ময়কর।
nnnn
nnnn
কিন্তু অনেকেই বলে থাকে, এলিয়েনও মানুষের মতোই জটিল এক জীবসত্ত্বা। এরাও ডিএনএ, প্রোটিন, কিংবা কার্বন-ভিত্তিক জীব। আবার, এরা সরল ভাইরাসের গঠনেরও হতে পারে, শুধুমাত্র ডিএনএ এবং আরএনএ দিয়ে তৈরি। এই দুইটা ধারণারই সম্ভাব্য উত্তর রয়েছে। যদি এলিয়েনকে শুধুমাত্র ডিএনএ-আরএনএ দিয়ে তৈরি সরল আকারের জীব বলে বিবেচনা করা হয়, তাহলে জানা উচিত ভাইরাসের ডিএনএ, আরএনএ-ও কিন্তু প্রোটিন দ্বারাই সুরক্ষিত থাকে। এই সুরক্ষা প্রোটিনকে বলা হয় ক্যাপসিড।
nnnn
nnnn
লেভিন্থানের প্যারাডক্স অনুসারে, যদি ১০০ অ্যামাইনো এসিডযুক্ত একটি সরল সিকুয়েন্সওয়ালা প্রোটিন নেওয়া হয়, তা দিয়ে ওই ক্যাপসিড প্রোটিন তৈরির সম্ভাবনা খুবই কম। রামাচন্দ্রন প্লট অনুসারে, প্রত্যেকটা অ্যামিনো এসিড শুধুমাত্র তিনটা অবস্থায় থাকতে পারে। এই ১০০ অ্যামিনো এসিডের চেইন থেকে তাহলে ৩^১০০ ফোল্ডেড স্ট্রাকচার তৈরি হওয়া সম্ভব। সেটা থেকে শুধুমাত্র একটা স্ট্রাকচারই হবে ফাংশনাল। আর এই যুক্তিকে যদি বহির্জগতে এলিয়েন সন্ধানে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন রুবিস্কোর (RuBisCO) ক্ষেত্রে খাটানো হয়, সেক্ষেত্রে এলিয়েন পাবার সম্ভাবনা বলা যায় শূন্য শতাংশ। রুবিস্কো এনজাইম হলো উদ্ভিদে পাওয়া সবচেয়ে পরিচিত এক প্রোটিন। এই প্রোটিন না থাকলে উদ্ভিদ কখনোই গ্লুকোজ তৈরি করত পারত না, কারণ এটি সালোকসংশ্লেষণে সাহায্য করে থাকে।
nnnn
nnnn
খাদ্য শৃঙ্খলের ডমিনো ইফেক্ট জানায়, রুবিস্কো না থাকলে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে পারবে না, উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি না করলে মানুষের মতো জটিল ডিএনএ, আরএনএভিত্তিক এলিয়েন থাকাও সম্ভব নয়। এখন দেখতে হবে, অন্য গ্রহে ডিএনএ, আরএনএভিত্তিক জীবন খোঁজা হলে, সেখানে রুবিস্কো এনজাইমের থাকার সম্ভাবনা কেমন? রুবিস্কো প্রোটিনে অ্যামাইনো এসিডের সংখ্যা ৪৭০টি। ল্যাভিন্থাল প্যারাডক্সের হিসেবে, রুবিস্কোর ৩^৪৭০ টি সিকোয়েন্স সম্ভব, যেটার আবার ১.৭৭×১০^২২৪ ভিন্ন ভিন্ন সিকোয়েন্স থাকা সম্ভব। এর মানে মহাবিশ্বে কমপক্ষে ১.৭৭×১০^২২৪টি গ্রহ থাকতে হবে। তাহলেই যেকোনো একটি গ্রহে রুবিস্কো থাকা সম্ভব হবে। মজার ব্যাপার হলো, মহাবিশ্বের সকল গ্রহের সাথে গ্রহাণু, ধূমকেতুকেও যদি গোণায় ধরা হয় তবে সে সংখ্যাটা হয় প্রায় ১০^৩৩, যা ১.৭৭×১০^২২৪ থেকে অনেক অনেক ক্ষুদ্র।
nnnn
nnnn
আধুনিক বিবর্তন তত্ত্ব অনুসারে, পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টি ও এমন জটিল বিবর্তন সম্ভব হয়েছে ভাগ্যক্রমে, বহুতর জটিল পর্ব পেরিয়ে। এর মধ্যে একটা পর্ব সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে জীবজগত এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারত না। অনেকের ধারণা, মহাবিশ্বের সকল জীবন হবে আমাদের মতো কার্বন-ভিত্তিক। কিন্তু কার্বনের মতো সিলিকনেও জীবন গঠনের বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য মজুদ আছে। তবে সিলিকন-ভিত্তিক জীবনের বাঁচার জন্য একটু বেশি তাপমাত্রার দরকার হবে।
nnnn
nnnn
এখন অবস্কিউর বায়োকেমিক্যাল প্যারাডক্সকে একপাশে রেখে কেউ যদি প্রশ্ন করে, “এলিয়েনের অস্তিত্ব থাকলে, তারা আমাদের দেখা দিচ্ছে না কেন?” এটার অনেকরকম উত্তর থাকতে পারে। পদার্থবিদ এনরিকো ফার্মির মতে, শিকারি যেভাবে উৎ পেতে থাকে, এলিয়েনরাও সেভাবে গা ঢাকা দিয়ে আছে। সঠিক সময়েই তারা দেখা দিবে। এই বিষয়ে ফার্মি প্যারাডক্সে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
n